মৃত্যুতেও ‘হা হা’ রিঅ্যাক্ট!

বাংলাদেশে সম্প্রতি আমি যে বিষয়টি বেশি লক্ষ্য করছি এবং কষ্ট পেয়েছি সেটা হলো- কোনো বিশিষ্ট ব্যক্তির মৃত্যুতে ‘হা হা’ রিঅ্যাক্টের বন্যা। এই প্রতিযোগিতায় আমাদের তরুণ প্রজন্ম পুরোপুরি সোচ্চার। যেন এটা ছাড়া তাদের আর কোনো কাজই নেই!

একজন মানুষের মৃত্যুতে কেন খুশি হতে হবে; বিষয়টা আমার বোধগম্য হচ্ছে না। আমাদের মতের দ্বিমত হতেই পারে তাই বলে তার মৃত্যুর সময়ে আমি খুশিতে উদ্বেলিত হয়ে ওঠব! এই সংকটের পেছনে সবচেয়ে বেশি দায়ী আমাদের দেশের নোংরা রাজনীতি। তরুণদের এই পথ দেখিয়েছে রাজনৈতিক নেতারা।

কারণ তারাই প্রতিপক্ষের মৃত্যুতে খুশি হয়ে ওঠে! বিপক্ষ দলের কারও মৃত্যুতে তাকে নিয়ে ঠাট্টা করা কিংবা মিষ্টি বিতরণ করে উল্লাসে মেতে ওঠার শিক্ষা তো রাজনীতিবিদরাই দিয়েছেন!

জনগণ তাদের প্রতিবাদের শক্তি হারিয়ে ফেলেছে। যে কোনো বিষয়ে প্রতিবাদ করার সুযোগ খুবই সীমিত। যারা কারও মৃত্যুতে খুশি হয়ে ওঠে তারা কি তাহলে ধারণা করে এভাবেই প্রতিবাদের শামিল হবে?

আরও একটি বিষয় বেশি লক্ষণীয় তা হলো ছেলে-মেয়েরা পরিবার থেকে দিনে দিনে দূরে সরে যাচ্ছে। পিতা-মাতা কিংবা ভাই-বোনের সঙ্গে যদি সম্পর্ক সুগভীর না হয়, তাহলে পথভ্রষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। পরিবারের লোকেদের চেয়ে ভালো বন্ধু কেউই হতে পারে না এটা যেন সবাই ভুলতে বসেছে।

এখনো সময় আছে- ঘরে ফিরে আসার। ভালোবাসা এবং সভ্যতাকে টিকিয়ে রাখতে পরিবারের দরকার। যে সমাজে পারিবারিক বন্ধন দুর্বল সেখানে শান্তির দেখা পাওয়া কঠিন। তাই যাবতীয় সমস্যার সমাধান এক সঙ্গে করা সম্ভব নয় তবে শুরু হতে পারে সবার আগে পরিবারের কাছে ফিরে আসা।

পিতা-মাতার দায়িত্ব হবে তার সন্তানকে বুকে আগলে রাখা। তা না হলে তারা ধ্বংস হয়ে যাবে চোখের সামনে। শুধু চেয়ে দেখবে সবাই কিছুই বলার বা করার থাকবে না শেষে। যে প্রজন্মের বুকে অসুস্থ চাওয়া-পাওয়া আর হাহাকার এসে বাসা বেঁধেছে তাদের কে হৃদয়ের মাঝে ফিরিয়ে এনে সুস্থ করে তোলার দায়িত্ব এখন সবার।

সুস্থ এবং সৃজনশীল সমাজ পেতে বর্জন করতে হবে দুর্নীতি আর অর্জন করতে হবে সুশিক্ষা। ‘পারিব না এ কথাটি বলিও না আর, কেন পারিবে না তাহা ভাবো একবার।’

Full Video


ভালো লাগলে শেয়ার করুন

এটা দেখেছেন কি? দেখে নিন